বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ। এ দেশের কৃষি ঋতু বৈচিত্র্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। ঋতু পরিক্রমায় আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষাকাল হলেও ইদানীং আষাঢ় মাসে তেমন একটা বর্ষার দেখা মেলে না। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে এমনকি আশ্বিন মাসেও অনেক সময় বন্যা দেখা দেয়। প্রকৃতির এ পরিবর্তন কৃষিক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলে থাকে। আগাম বন্যা কিংবা নাবি বন্যার কারণে কৃষিতে অনেক সময় বিপর্যয় ডেকে আনে। যেমন-আগাম বন্যায় হাওর এলাকার পাকা কিংবা আধাপাকা ধান পানিতে ডুবে কৃষকের ঘাম ঝরানো শ্রম ও অর্থের ব্যাপক ক্ষতি করে। আবার নাবি বন্যার কারণে রবি ফসলের চাষাবাদ পিছিয়ে যায়। এসব কারণে পরিবেশের সঙ্গে খাপখাইয়ে যেসব ফসল চাষাবাদ করে ভালো ফলন পাওয়া যায় এবং সময়মতো ঘরে তোলা যায়, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে কৃষিকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা দেশের কৃষি গবেষক, কৃষি বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণবিদ সবাই মিলে অব্যাহত রেখে চলেছেন। এ কথা সত্যি যে, দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু দেশের জনসংখ্যা যেহেতু ক্রমবর্ধমান সেহেতু প্রতি বছর খাদ্যের চাহিদা কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পায়। এ বিষয়টি মাথায় রেখে আমাদের খাদ্যফসলের উৎপাদন সমানুপাতে বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে হবে। আর একটি বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে যে, শুধু দানাজাতীয় খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেই চলবে না, পুষ্টির দিকটিও বিবেচনায় রাখতে হবে। এজন্য শাকসবজি, ফলমূল চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন ও গ্রহণের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। আমরা আশা করি এ ব্যাপারে সবাই সচেতন হবেন।
প্রিয় চাষি ভাইয়েরা, ভাদ্র মাসে কৃষি কাজের ব্যাপকতা কম থাকলেও বাড়িঘর ও মাঠের অনেক টুকিটাকি এমন সব কাজ থাকে, যা কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এসব কাজ সময়মতো সম্পন্ন করে রাখলে সারা বছর স্বাচ্ছন্দ্যে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা চাই সুপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর ও মাঠের কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করে নিজের জীবনমান ও কৃষির সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখুন, দেশকে আরো সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যান।